ওয়াশিংটননিউজ টিভি, ঢাকা, রবিবার, ০৭ মে ২০২৩ : শেয়ারবাজারে আজ থেকে ঋণসুবিধা আরও একটু সহজ হচ্ছে। শেয়ারের বিপরীতে ঋণসুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে শর্ত আরও একটু শিথিল করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
গত সপ্তাহের সর্বশেষ কার্যদিবস বুধবার প্রান্তিক (মার্জিন) ঋণের শর্ত শিথিল করে নতুন নির্দেশনা জারি করে বিএসইসি। তাতে বলা হয়, এখন থেকে ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত ৩০ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানির শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে ৫০ মূল্য আয় অনুপাত বা পিই রেশিও পর্যন্ত ঋণসুবিধা পাবেন বিনিয়োগকারীরা। আগে ৫০ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিগুলোকে এ সুবিধা দেওয়া হতো। সেই শর্ত শিথিল করে এখন ৩০ কোটিতে নামিয়ে আনা হয়েছে।
তবে বিএসইসি জানিয়েছে, সর্বোচ্চ এই ঋণসুবিধা দেওয়া হবে কেবল ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত, অর্থাৎ ভালো মৌলভিত্তির শেয়ারের ক্ষেত্রে; যেসব শেয়ার সর্বশেষ টানা তিন বছর এ শ্রেণিভুক্ত রয়েছে, তাদের। এর বাইরে অন্যান্য শেয়ারের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ঋণসুবিধা মিলবে ৪০ পিই রেশিও পর্যন্ত।
ধরা যাক, কোনো একটি কোম্পানির শেয়ারের বাজারমূল্য ১০০ টাকা। আর ওই কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস ১০ টাকা। তাহলে কোম্পানিটির মূল্য আয় অনুপাত দাঁড়াবে ১০। কারণ, শেয়ারের বাজারমূল্যকে আয় দিয়ে ভাগ করে মূল্য আয় অনুপাত হিসাব করা হয়। এখন বিএসইসির নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওই কোম্পানির শেয়ারের দাম ৫০০ টাকা অতিক্রম না করা পর্যন্ত ওই শেয়ারের বিপরীতে ঋণসুবিধা পাবেন বিনিয়োগকারীরা। এত দিন এই ঋণসুবিধা ৪০ পিই পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। তাতে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৪০০ টাকা অতিক্রম না করা পর্যন্ত ঋণসুবিধা পেতেন বিনিয়োগকারীরা।
গত বুধবার ঋণের শর্ত শিথিলের পর সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে তিন দিন শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ ছিল। ফলে বাজারে এ সিদ্ধান্তের কী প্রভাব পড়ে, তা বোঝা যায়নি। ছুটি শেষে আজ সপ্তাহের লেনদেন শুরু হচ্ছে। তাই ঋণের শর্ত শিথিলের কী প্রভাব পড়ে, সে দিকেই নজর থাকবে বিনিয়োগকারীদের। গত কয়েক দিনে বাজারের লেনদেনে কিছুটা গতি দেখা যাচ্ছে। এ অবস্থা ধরে রেখে বাজার গতিশীল করতেই মূলত ঋণের শর্ত শিথিলের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে বিনিয়োগকারীরা ভালো মৌলভিত্তির শেয়ারে বিনিয়োগে আকৃষ্ট হন।
ঋণের শর্ত শিথিলের কারণ জানতে চাইলে বিএসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান ও বাজার মধ্যস্থতাকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে ভালো শেয়ারে দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগে আকৃষ্ট হন বিনিয়োগকারীরা।
এখন দেখার বিষয়, ভালো শেয়ারে বিনিয়োগে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ে, নাকি স্বল্প মূলধনী ও কারসাজির শেয়ারই বাজারে দাপট দেখায়।