দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে হবে

সম্পাদকীয়
প্রকাশের সময় : শনিবার, ১৩ মে, ২০২৩

নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী গতি কোনোভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না। বাজারে দাম বাড়েনি এমন কোনো পণ্য নেই। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে মানুষের জীবনযাত্রায়। ভোক্তাকেই শেষ পর্যন্ত মাসুল দিতে হচ্ছে। খরচের ক্ষেত্রে অনেক কাটছাঁট করতে হচ্ছে। তেলের দাম বেড়েছে। চিনির দাম সমন্বয়ের পরও সুফল মিলছে না। নতুন করে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে চিনি। মাছ-মাংসের দাম বেড়েছে রমজানের আগেই। তা নিম্নমুখী হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই।

এখন বাজারে সবজির দাম চড়া। ৬০ টাকা কেজি দরের নিচে কোনো সবজিই মিলছে না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, টানা দাবদাহে দেশের সবজি উৎপাদনকারী জেলাগুলোতে চলতি মৌসুমে অনেক কম উৎপন্ন হয়েছে। যেটুকু উৎপন্ন হয়েছে কৃষকের কাছ থেকে তা বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে পাইকারি ব্যবসায়ীদের। একইভাবে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বাড়তি দামে কিনছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। আর তাঁদের কাছ থেকে ভোক্তাসাধারণ কিনছে আরো বেশি দামে।

কয়েক সপ্তাহ ধরে বাজারে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। ঢাকার বাজারে এখন প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। কাঁচা মরিচ কেজিতে ৪০ থেকে ৬০ টাকা বেড়ে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বেগুন প্রতি কেজি ৮০ টাকা, করলা ৮০ থেকে ৯০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা এবং চালকুমড়া প্রতি পিস ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আগে থেকে বাড়তি দামে বিক্রি হওয়া আদা ও রসুনের দাম আরো বেড়েছে। দেশি ও আমদানি করা রসুন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আদা কেজিতে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকায়। ব্রয়লার মুরগির কেজি ২১০ থেকে ২২০ টাকা এবং সোনালি মুরগির কেজি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা।

বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীরা যেসব যুক্তি দেখান তার বেশির ভাগই মানতে নারাজ ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করেন এমন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, ব্যবসায়ীরা অত্যধিক মুনাফার জন্য বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেন। এ জন্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা দরকার। কেউ কৃত্রিম সংকট তৈরি করলে আইনের আওতায় আনতে হবে। তবে প্রতিযোগিতমূলক না হলে শুধু দাম বেঁধে দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

বর্তমানে সাধারণ মানুষ বা ভোক্তাদের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। তাদের স্বার্থ রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারের ওপর সরকারের কার্যকর কোনো নিয়ন্ত্রণ দৃশ্যমান নয়। টিসিবি অতি সীমিত পরিসরে নিত্যপ্রয়োজনীয় কয়েকটি পণ্য বিক্রি করলেও বাজারে তার কোনো প্রভাবই পড়ে না।

বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সরাসরি মাসুল দিতে হচ্ছে ভোক্তাদের। জনমনে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের সমস্যা সবচেয়ে বেশি। দ্রুত এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। আমরা মনে করি বাজার নিয়ন্ত্রণে এবং মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সরকারের সর্বোচ্চ উদ্যোগ জরুরি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

Recent Comments

No comments to show.